কিছুক্ষণ আড্ডা দিয়ে তারপর গেল আন্টির বাড়িতে।
গত কদিন যা ধকল গেছে, আজ আর আন্টিকে চুদতে ইচ্ছে করল না ওর।
আন্টি চেয়েছিল, কিন্তু ও বলল, ‘আজ যদি আবার আপনার বন্ধুর কাছ যেতে হয়!! টায়ার্ড হয়ে যাব। আর কিছু কথা আছে আপনার সঙ্গে আন্টি।‘
‘কী কথা?’
‘দেখুন অন্যভাবে নেবেন না! আপনি আমাকে নেহার কাছে তার পর উনি রিমিদির কাছে – অনেকের কাছেই তো যাই। আমি ভাবছিলাম আমার যদি কিছু হাতখরচ, পড়াশোনার খরচ উঠে আসে এগুলো থেকে। আপনার বা নেহা আন্টি বা রিমিদিকে বলার তো প্রশ্নই নেই। কিন্তু আপনার বন্ধু কি খরচ করতে রাজী হবেন কিছু? সেটা জেনে নিন।‘
‘বাহ। ভাল প্ল্যান করেছ তো!! ঠিকই তো। তোমারও তো হাতখরচ দরকার। দাঁড়াও আমি বন্ধুকে বলে দেব। কখন যাবে?’
‘উনার তো আবার অফিস থাকে বলেছিলেন। তাহলে সন্ধ্যেবেলাই যাব।‘
‘আমার তো সন্ধ্যেবেলায় বেরনো অসুবিধা। তোমাকে বলে দিলে যেতে পারবে না একা? টাকার কথা আমি বলে রাখব।‘
‘ঠিক আছে অ্যাড্রেস দিয়ে দিন। চলে যাব।‘
আন্টির কাছ থেকে উনার বান্ধবীর ঠিকানা নিয়ে বাড়ি চলে এলাম। খাওয়া দাওয়া করে ভাল করে ঘুমোলাম। গত তিনদিন রিমিদি আর পরী যা অত্যাচার করেছে, তাতে ভাল করে ঘুমই হয় নি।
ঘুমিয়ে উঠে চা খেয়ে বেরলাম পকেটে আন্টির বান্ধবীর ঠিকানাটা নিয়ে।
বেশ পশ এলাকায় থাকেন, একটা অ্যাপার্টমেন্ট কমপ্লেক্সে।
কী মনে করে এক প্যাকেট কন্ডোম কিনে নিলাম। যদি দরকার হয়।
কমপ্লেক্সটা খুঁজে পেয়ে গেলাম। গেটে দারোয়ান আছে। তাকে বলতে হল কোন ফ্ল্যাটে যাব। সে ফোন করে জিগ্যেস করল। তারপর আমাকে ধরিয়ে দিল ফোন।
হিন্দিতে জিগ্যেস করলেন কেন যেতে চাই উনার ফ্ল্যাটে।
আমি বললাম আন্টির নাম – আমাকে আসতে বলেছেন।
‘ও হো.. এসে গেছ। ঠিক আছে। দারোয়ানকে দাও। বলে দিচ্ছি।‘
দারোয়ান খাতায় নাম ঠিকানা নোট করে নিল। তারপর দেখিয়ে দিল কোন দিকে দিয়ে যেতে হবে।
লিফটে করে উঠে গেলাম ন তলায়।
ফ্ল্যাটের নম্বর দেখে নিয়ে বেল বাজালাম।
দরজা খুললেন এক প্রচন্ড ফর্সা, লম্বা এক মহিলা। বেশ লম্বা চুল – খুলে রাখা। একটা সিল্কের রোব পড়েছেন, হাঁটুর একটু নীচ অবধি।
হিন্দিতেই বললেন, ‘এসো এসো ভেতরে এসো।‘
আমার হাতটা আলগোছে ধরে ভেতরে নিয়ে গেলেন।
আমার প্রথম কাস্টমার। আমার জিগোলো জীবনের শুরু হল।
এর পর আন্টিদের নিয়ে উত্তমের আর ফ্যান্টাসাইজ করার সুযোগ থাকল না। কঠোর বাস্তবে নেমে এল সে। গত কয়েকমাস যেটা এঞ্জয় করার জন্য করত সে, আজ থেকে সেটা টাকা রোজগারের জন্য করতে থাকল।
ধীরে ধীরে পাশের বাড়ির আন্টি, নেহা আন্টির সঙ্গে যোগাযোগ কমে এল।
রিমিদির বাড়িতে মাঝে মাঝে যায়, পরীও তখন আসে।
আন্টির পাঞ্জাবী বান্ধবীকে খুশি করে সে নিজের জিগোলো জীবনের প্রথম রোজগার করেছিল দু হাজার টাকা।
ওই ভদ্রমহিলা তো মাঝে মাঝে ডাকতেনই, আর তাঁর নিজের পরিচিত, বান্ধবীদের কাছেও উত্তমকে পাঠাতে লাগলেন তিনি।
আন্টি, মধ্যবয়সী বা যুবতী আনস্যাটিসফায়েড মহিলাদের আনন্দ দেওয়ার মাধ্যমে যেমন উত্তম নিজেও কিছুটা আনন্দ পেয়েছে, তেমনই তার রোজগারও হচ্ছে ভালই।
তবে জিগোলোরা যে শুধুই এঞ্জয় করতে পারে, তা না।
অনেক বিকৃতকাম মহিলার অত্যাচারও যে সহ্য করতে হয়, সেটা জানত না উত্তম। কেউ টাকার বিনিময়ে গায়ে সিগারেটের ছ্যাঁকা দেয়, কেউ মুখে পানের পিক ফেলে, কেউ পুরুষাঙ্গটাকে পা দিয়ে চেপে ব্যাথা দেয় – এতেই যৌনসুখ অনুভব করে তারা। প্রত্যেকটা অত্যাচার সহ্য করতে পারলেই টাকা।
শুধু মধ্যবয়সী বা যুবতীরা নয়, উত্তমের ডাক পরে কম বয়সী, কলেজ পড়ুয়াদের কাছ থেকেও। কখনও দুই বা তিন বান্ধবী বাবা-মার বাড়িতে না থাকার সুযোগ নিয়ে ডেকে পাঠায় উত্তমকে। সেই সব দিন কলেজে যেতে পারে না উত্তম।
পরীক্ষার রেজাল্ট বেরিয়েছে। ভাল কলেজে ভর্তি হয়েছে সে। পড়াশোনার বাইরে আর টাকা রোজগারের জন্য মহিলাদের সঙ্গে সঙ্গম ছাড়া খুব বেশী সময় পায় না আজকাল। বাড়িতে বলেছে টিউশানি করে টাকা রোজগার করছে ভালই।
রিমিদি কিছুটা আন্দাজ করেছে যে উত্তমের রোজগারের উৎস কী। কীভাবে ও পরীকে আর রিমিদিকে বেশ দামী দামী গিফট কিনে দেয় মাঝে মাঝে।
বন্ধু নেহার কাছে একটু খোঁজ নিয়েই নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল রিমি যে ওর ছাত্র কীভাবে টাকা রোজগার করছে।
পরীকে কিছু বলে নি। তবে রিমি ঠিক করেই নিয়েছে যে উত্তমের কাছ থেকে ধীরে ধীরে সরিয়ে দিতে হবে। দিল্লির একটা ভাল স্কুলে চাকরীর জন্য অ্যাপ্লাই করেছিল রিমি। সেই চাকরীটা হয়ে গেছে। ও চেষ্টা করে পরীকেও দিল্লির একটা ভাল কলেজে ভর্তি করেছে।
দিদির মেয়েকে নিয়ে ও কাল সকালের ফ্লাইটে দিল্লি চলে যাবে রিমি।
তার আগে উত্তমকে একবার আসতে বলেছে। পরী জানে না সেটা।
কিন্তু উত্তম সন্ধ্যে পর্যন্তও এসে পৌঁছল না। রাত হয়ে গেল, তাও কোনও খবর নেই।
অপেক্ষা করতে করতে খাওয়া দাওয়া করে ঘুমিয়ে পড়ল রিমি।
পরের দিন খুব সকালে বেরতে হল। রাস্তায় পরীকে পিক আপ করে নিল।
ওদের সঙ্গে মালপত্র বেশী নেই। দিল্লিতে গিয়ে মাসি-বোনঝি নতুন করে সংসার পাতবে।
এয়ারপোর্টে পৌঁছিয়ে চেক ইন, সিকিউরিটি চেকের পরে যখন বোর্ডিংয়ের জন্য অপেক্ষা করছিল, তখন নিউজস্ট্যান্ড থেকে একটা বাংলা কাগজ কিনেছিল পরী।
সেটার ভেতরের পাতায় একটা ছবি সহ খবর – ‘মধুচক্র থেকে কলেজ পড়ুয়া সহ গ্রেপ্তার ৩ গৃহবধু’
খবরটা পড়তে পড়তে পরী ধপ করে বসে পড়ল সামনের চেয়ারে।
রিমি হঠাৎ পরীকে ওরকম করে বসে পড়তে দেখে বোনঝির হাত ধরে ফেলল।
‘কী হয়েছে পরী? শরীর খারাপ লাগছে! কী হল তোর?’
পরী চোখ বন্ধ করে খবরের কাগজটা এগিয়ে দিল দিদির দিকে।
রিমি দেখল তার ছাত্রের ছবি বেরিয়েছে কাগজে, আর সঙ্গে ছাপা হয়েছে তার কৃতিত্বের খবর।
পরীর পাশেই বসে পড়ল রিমি।
রিমি বুঝল যে কেন তার প্রিয় ছাত্র কাল আসতে পারে নি। ওই খবরের কলেজ পড়ুয়ার নাম তো উত্তম। ছবিটাও স্পষ্ট।
দিল্লির ফ্লাইটের বোর্ডিং শুরুর ঘোষণা হল।
পরী, রিমি আর উত্তমের পথ চিরকালের জন্য আলাদা হয়ে গেল।
সমাপ্ত